ডেস্ক নিউজ:
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জমাতের দুই পক্ষের কয়েক হাজার মুরুব্বী ও মুসুল্লির মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ময়দান ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

জানা গেছে, সাদপন্থী তাবলিগ মুরুব্বীরা টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে কওমি মাদরাসা থেকে বিপুল সংখ্যক ছাত্র এসে অবস্থান নেয় ইজতেমা ময়দানে। তারা সাদপন্থীদের মাঠ থেকে সরে যেতে বাধ্য করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাবলিগ সুরা সদস্য ভারতের সাদপন্থীর অন্যতম এক মুরুব্বী জানান, প্রতি বছরের মতো এবারও তারা বিশ্ব ইজতেমা শুরুর নির্ধারিত সময়ের আগে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু ৩০ নভেম্বর জোড় ইজতেমায় যোগ দিতে আসা কয়েক হাজার মুসুল্লি ইজতেমা ময়দানে ঢুকতে গেলে দেওবন্দ কওমিপন্থী মাওলানা জোবায়েরের অনুসারী বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্ররা তাদের বাধা দেন।

কয়েকদিন আগে থেকেই লাঠি-সোটা নিয়ে কয়েক হাজার ছাত্র ময়দানে ঢোকার ফটকগুলো বন্ধ করে সেখানে অবস্থান নেন তারা। ফলে কয়েক দিন ধরে জোড় ইজতেমায় যোগ দিতে আসা মুসুল্লিরা শুক্রবার ময়দানে ঢুকতে না পেরে আশপাশের মসজিদে অবস্থান নেন। পরে আজ শনিবার ভোরে আবারও তারা ময়দানে ঢুকতে গিয়ে জোবায়েরপন্থীদের বাধার মুখে পড়েন। এ নিয়ে ওই এলাকায় মুসুল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ওই মুরুব্বী আরও বলেন, জোড় ইজতেমায় যদি কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকে তাহলে তারা তা করবেন না। তারা কারও সঙ্গে মারামারি হানাহানি করবেন না, ময়দানে বসে শুধু মোনাজাত করে চলে যাবেন। তারা পুলিশের প্রতি ছাত্রদের ময়দান থেকে মাদরাসায় ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।

অপরদিকে প্রতিপক্ষের দেওবন্দ কওমিপন্থী তাবলিগ মুরুব্বী মো. মাহফুজ জানান, ৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর তাদের জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘোষণা দেন। এ ঘোষণা শুনে সাদপন্থীরা ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দু’পক্ষকে ডেকে নিয়ে নির্বাচনের আগে জোড় ইজতেমা স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো হয়। সেখানে উভয় পক্ষই ওই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। তারপরও সাদপন্থী কয়েক হাজার তাবলিগ মুসুল্লি শনিবার ভোরে জোড় ইজতেমা করার জন্য ময়দানে ঢোকার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. এমদাদুল হক ঘটনার সত্যত্যা স্বীকার করে বলেন, এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইজতেমা ময়দান এলাকায় পুলিশ র্যাবসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার থোয়াই অংপ্রু মারমা বলেন, ইজতেমা ময়দানের বাইরে কয়েক হাজার মুসুল্লি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নেয়ায় যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে মুসুল্লিদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা চলছে।